ঢাকা, রবিবার ০৭, ডিসেম্বর ২০২৫ ২:৫৬:৫০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
খালেদা জিয়ার অবস্থা এখনও উদ্বেগজনক আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, থামানো গেছে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ আগারগাঁওয়ে গ্যাসের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, নারীসহ দগ্ধ ৬ প্রবাসীদের নিবন্ধন ছাড়াল এক লাখ ৯৩ হাজার

নিত্যপণ্যের দামে দিশেহারা ভোক্তা  

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:০৩ এএম, ১৯ আগস্ট ২০২৩ শনিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বাজারে হু হু করে প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে লাগামহীন হয়ে পড়েছে বাজার। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভোক্তারা। চাল, ডাল, চিনি, তেল, পিয়াজ, রসুন, আদা ও ডিমসহ সব কিছুর দাম বেড়েছে।

বিশেষ করে সবজির দাম এতটাই বেড়েছে যে, স্বল্প আয়ের মানুষ সবজি কিনতে গিয়ে ফিরে আসছেন। স্বল্প আয়ের মানুষ প্রতিদিনের মেনুতে কমিয়ে দিচ্ছেন খাবার। আগের চেয়ে কম খাচ্ছেন। খুব কষ্টে আছেন সীমিত আয়ের মানুষ।

শুধু তাই নয়, আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশী বলে অনেকে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। মাস শেষে বাসা ভাড়া, বাচ্চাদের স্কুলের খরচ, চিকিৎসা ব্যয়, মাসিক বাজারসহ দৈনন্দিন খরচ মেটাতে হিমসিম খাচ্ছেন। উচ্চবিত্ত দুচিন্তামুক্ত থাকলেও মধ্যবিত্তের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। নিরূপায় হয়ে পড়ছেন মধ্যবিত্তরা।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট, হাতিরপুল, সেগুনবাগিচা, শন্তিনগর, মালিবাগ, খিলগাঁও, রামপুরা, মেরাদিয়ার বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে প্রতিটা পণ্যের দাম বেড়েছে। আজ শনিবার  ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানীর বাজারে ক্রেতার ভিড় ছিল অন্যদিনের তুলণায় বেশী। তবে তাদের চোখে-মুখে চিল চিন্তার রেখা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ পণ্যের দামেই আকাশচুম্বি। প্রতিটা পণ্যেরই দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের চেয়ে আবার বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ টাকা।

রসুনের দাম বেড়ে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে আদা, হলুদ, জিরাসহ অন্যান্য মসলা পণ্যের। মাঝারি বিআর-২৮ চাল ৬০ টাকা। খোলা আটা কেজি ৫০ টাকা। এঙ্কর ডাল ৭৫ টাকা।

পাঙাশ মাছ ২০০ টাকা তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। ডিমের হালি ৫০ তেকে ৫৫ টাকা, আর ব্রয়লারের কেজি ১৯০ টাকা। কাঁচা মরিচের দাম কমলেও বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। সয়াবিন প্রতি লিটার ১৭৫ টাকা।

রাজধানীর দক্ষিণ বন্শ্রী এলাকায় থাকেন আবুবকর। বাড়ি মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানায়। বন্শ্রীতে নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার। তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, এখন এমন একটা অবস্থা। বাজারে গিয়ে ফেরত আসতে হয়। নিজের কাছে লজ্জা লাগে।

তিনি আরও বলেন, সব কিছুর দাম এত বেশী যে, খুব কম পরিমাণে কিনতে হয়। ছোট খাট ব্যবসা করে আগের মত সংসারের মাসিক খরচ মেটানো যাচ্ছে না। তাই বাজার কমিয়ে দিছি। বাচ্চাদের কস্ট হয়। কি করবো উপায় নেই। জীবন চলছে কোনো মতে। একে বেঁচে থাকা বলে না।

মগবাজারের বাসিন্দা বরিশালের রিপন আহমেদ। চাকরি করেন সিদ্ধেশরীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। লজ্জার কথা কি বলব। মাস শেষে হাত খরচের টাকা থাকে না।

তিনি আরও বলেন, অনেকদিন ধরে অসুস্থ্ হলেও টাকার অভাবে ডাক্তার দেখাতে পারছি না। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশী। সঞ্চয়তো দুরের কথা প্রতিমাসে ঋণ হতে হচ্ছে। ভবিষ্যত নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। এভাবে চলতে থাকলে চাকরি ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে হবে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাস্ন্দিা প্রফেসর মো. হেমোয়েত হোসেন। তিনি বলেন, সরকারি চাকরি করি। এমনিতেই হিসেব করে চলতে হয়। সমাজে সৎভাবে বেঁচে থাকা এখন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন পরিস্থিতি কঠিন হচ্ছে। বর্তমান বাজারে আমাদের মত মানুষের টিকে থাকাটাই দায়। তবে যারা অসৎ উপায়ে রোজগার করেন তারা ভাল আছেন। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই।

এদিকে পণ্যের দাম এত বেশী কেন জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দাম বেশী দিয়ে কিনতে হচ্ছে, তাই বিক্রি করতে হচ্ছে বেশী দামে। আমাদের কিছু করার নাই। সিন্ডিকেটতো পাইকারি বিক্রেতা ও বড় ব্যবসায়ীরা।

ক্রেতাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াচ্ছে আসাধু ব্যবসায়ীরা। অর্থলোভী সিন্ডিকেট চক্র সাধারণ ভোক্তাদের জিম্মি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বাজারে যারা পণ্যের জোগান দিচ্ছে, বড় ব্যবসায়ীদের হাতেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ এবং পণ্যমূল্য নির্ধারণ করছে তারাই।

ক্রেতারা আরও বলেছেন, কারসাজি করে হঠাৎ নির্দিষ্ট পণ্যের দাম বাড়িয়ে দু‘একদিনে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন পণ্যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। কিন্তু সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এখানে সিন্ডিকেট আর কারসাজিই মুখ্য।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে বারবার কারসাজি হলেও এ থেকে পরিত্রাণ মিলছে না। হঠাৎ নির্দিষ্ট একটি পণ্যের দাম রাতারাতি বেড়ে যায়। ভোক্তার পকেট কাটা যায।দ্রুততম সময়ে কারসাজিকারীরা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। তবে সরকারকে এসব সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।